কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পূজা বিসর্জনে আনন্দ উৎসবে মেতেছে দুই বাংলার মানুষ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া ) প্রতিনিধি :

 

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে দুর্গাপূজার বিসর্জনে আনন্দ উৎসবে মেতেছিল দুই বাংলার মানুষ। বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের উপস্থিতি ও তাদের কড়া নজরদারিতে মাথাভাঙ্গা নদীর দুইপাড়ে বসেছিল মানুষের মিলন মেলা। বিজয়া আনন্দে তারা আত্মীয়তার বন্ধনও করেছেন অটুট। তবে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই পূজা বিসর্জন হলে শেষ হয় এ মিলন মেলা।

ওপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শিকারপুর সীমান্ত আর এপারে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ সীমান্ত স্থানীয়দের কাছে ভারলের মাঠ নামে পরিচিত। মাঝখানের সীমানা সরু মাথাভাঙ্গা নদী। এ নদীর দুইপাড়ে ২৪ অক্টোবর, মঙ্গলবার দুর্গোৎসবের বিজয় দশমীর পূজা বিসর্জনে কাঁটাতারের সীমানা বিভেদ ভুলে দুই দেশের মানুষের মধ্যে ঘটেছিল আনন্দ ও সোহার্দপূর্ণ মিলন।

 

দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দিতে এসে দুই পারের মানুষ সাঁতরিয়ে নদী পার হয়ে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একে অপরকে করেছে মিষ্টি মুখ। করেছেন কুশল বিনিময়। ঝালিয়ে নিয়েছে আত্মীয়তার অটুট বন্ধন।

 

বছরে একটি উৎসবের অপেক্ষা। আর তা হলো দুর্গোৎসবের বিসর্জন। যারা আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দুই দেশে যাতায়াত করতে পারেন না, তাদের অপেক্ষার অবসান হয় বিজয় দশমীর দেবী দুর্গার বিসর্জন ক্ষণে। দুপুর হতে না হতেই ব্যাকুল হয়ে থাকা মানুষগুলো ছুটে যান নদীপাড়ে আপনজনের দেখা পেতে। অশ্রুসজল নয়নে দূরদৃষ্টি দিয়ে দেখতে থাকেন এপার ও ওপারে থাকা আপনজনদের।

 

দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি-বিএসএফ’র কড়া নজরদারি থাকলেও তাদের চক্ষুর অন্তরালেও নদীর দুইপাড়ে থাকা বাঙালিদের সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে দেখা গেছে। তবে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই পূজা বিসর্জন শেষ হয়। সেইসাথে শেষ হয় সম্প্রীতি ও সোহার্দের মিলন। অপেক্ষা আরো একটি বছর।

 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার করিমপুর ও মরুটিয়া থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে দুর্গাপূজা বিসর্জন দিতে নিয়ে আসা হয় শিকারপুর সীমান্তের মাথা ভাঙ্গা নদীতে। এদিকে বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ সীমান্তে জড়ো হয় দৌলতপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ। দীর্ঘ একবছর বা তারও বেশী সময় পর দেখা হওয়ায় এক অপরকে জড়িয়ে ধরে আবেগে আপ্লুত হয়ে আত্মীয়তার বন্ধনও অটুট করেন। তবে সন্ধ্যার পূর্বেই পূজার বিসর্জন শেষ হলে সীমান্ত এলাকা থেকে উভয় দেশের সব ধর্মের মানুষকে দ্রুত সরিয়ে নেয় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী। বিসর্জন মিলনে অংশ নেওয়া দুই বাংলার মানুষের অপেক্ষা আগামী বছরে মা দুর্গার বিসর্জনে।

 

এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যেই দৌলতপুর উপজেলার পদ্মা নদী, মাথাভাঙ্গা নদী, হিসনা নদীসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ বছর দৌলতপুর উপজেলার ১২টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হলে শান্তিপূর্ণভাবে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *