ঘূর্ণিঝড় হামুন: লণ্ডভণ্ড কক্সবাজার, নিহত ৩

নিউজ ডেস্ক :

 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে উড়ে গেছে গাছপালাসহ কাঁচা ও আধা পাকা ঘরবাড়ি। কক্সবাজার শহরের ৭ নাম্বার ওয়ার্ডে বাড়ির দেয়াল চাপায় আব্দুল খালেক নামে একজন ব্যবসায়ী এবং মহেশখালীতে গাছচাপায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। 

 

মঙ্গলবার (২৪ অক্তোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর থেকে ঘূর্ণিঝড় হামুন কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানা শুরু করে। এরপর একটানা রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কক্সবাজার উপকূল ও এর আশপাশের অঞ্চল দিয়ে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। একই সাথে শুরু হয় বজ্রসহ বৃষ্টি।

 

ঝড়ো হাওয়া আর বাতাসের তীব্র আঘাতে কক্সবাজার শহর ও উপকূল এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়ে এবং কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়। কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরসহ অনেক এলাকায় গাছ উপড়ে পড়ে। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যহত হয়। সন্ধ্যার পর থেকে কক্সবাজার শহরে ও আশেপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

 

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, কক্সবাজার শহরের ৭ নাম্বার ওয়ার্ডে বাড়ির দেয়াল চাপায় আব্দুল খালেক নামে একজন এবং মহেশখালীতে গাছচাপায় অপর একজন মারা গেছে। ঘূর্ণিঝড় হামুনে সৃষ্ট ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে জেলায় কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়া কুতুবদিয়া পাড়াসহ জেলার উপকূল এলাকায় ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বুধবার (২৫ অক্টোবর)  ঘূর্ণিঝড় আমুনের আঘাতে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দেয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনদের শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ ইমাম উদ্দিন জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় হামুন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। এর আগে, ঘূর্ণিঝড় হামুন সাগরে গতিপথ পরিবর্তন করে এটি কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূলের দিকে ধাবিত হয়। পরে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বরের পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করে আবহাওয়া অফিস।  ঘূর্ণিঝড় আমুনের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্র বৃষ্টি হয়। কক্সবাজার উপকূলে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

 

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কক্সবাজারে ব্যপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাস জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সৈকতে বিপদ সংকেতের অংশ হিসেবে পর্যটকদের সতর্কতা হিসেবে মাইকিং করা হয়েছে। এ ছাড়া সৈকতে দায়িত্বরত লাইফ গার্ড কর্মীরা পর্যটকদের নিরাপদে থাকতে মাইকিং করেছে। কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার ৩০ হাজার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। উপকূলের নৌযান এবং মাছ ধরার নৌকাগুলোকে উপকূলের নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *