যশোর জেলা আ.লীগের সম্মেলন আজ- নেতৃত্ব আসতে পারে নতুন মুখ

এবিএস রনি, যশোর প্রতিনিধি : জাতীয় ও স্থানীয় প্রয়াত নেতাদের স্মরণে সড়কে বর্ণিল তোরণ। পদপ্রত্যাশী নেতাদের বাহারি ব্যানার-ফেস্টুনে শুভেচ্ছা বার্তায় ছেয়ে গেছে রাজপথ ও অলিগলি। ঈদগাহ ময়দানে ব্যাপক সাজসজ্জা। গোটা শহরে এমন আয়োজন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ঘিরে। আজ সকাল ১০টায় শহরের ঈদগাহ ময়দানে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করা হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। ঈদগাহ ময়দানে ১৫ হাজার নেতাকর্মীর বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর সম্মেলনে শহরে লক্ষাধিক নেতাকর্মীর সমাগম হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা। সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্মেলন অনুষ্ঠানে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আর সম্মেলনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর রয়েছে পুলিশ ।

যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এরমধ্যে টহল পুলিশ, অনুষ্ঠানস্থলে স্ক্যানার থাকবে। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের সময় তল্লাশি করা হবে। এছাড়াও সাদা পোশাকে পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ঝুঁকির কোনো বিষয় দেখছি না। তারপরও সম্মেলন ঘিরে পুলিশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে।
দলীয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে শহিদুল ইসলাম মিলনকে সভাপতি ও শাহীন চাকলাদারকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ জেলা আওয়ামী লীগের ৮৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ৪৫৫ কাউন্সিলরের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির ৬৮ জন, যশোর সদর উপজেলার ৬৪ জন, শহর আওয়ামী লীগের ৪২ জন, মণিরামপুর উপজেলার ৪৩ জন, চৌগাছা উপজেলার ৩০ জন, শার্শার ৩৫ জন, বাঘারপাড়ার ২৭ জন, অভয়নগরের ২৬ জন, ঝিকরগাছার ৪১ জন ও কেশবপুরের ৩৪ জন। কো-অপ্ট করা হয়েছে ৪৫ জনকে।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন জানান, প্রস্তুত সম্মেলনস্থল ঈদগাহ ময়দান। ময়দানে ১৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মীর আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্মেলন ঘিরে লাখো নেতাকর্মী ও সমর্থকের সমাগম ঘটবে শহরে। স্মরণকালের সেরা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। যার আয়তন ও নান্দনিকতা একেবারেই ভিন্ন। সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। ইতিমধ্যে সম্মেলন সফল করতে অভ্যর্থনা উপকমিটি, অর্থ উপকমিটি, সাজসজ্জা উপকমিটি, আপ্যায়ন উপকমিটি, স্বাস্থ্য উপকমিটি, প্রচার উপকমিটি, দপ্তর উপকমিটি ও স্বেচ্ছাসেবক উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সম্মানিত অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বিশেষ অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-হানিফ, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান, বিশেষ বক্তা থাকবেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সদস্য এসএম কামাল হোসেন ও পারভীন জামান কল্পনা। আমন্ত্রিত অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্তজা, যশোর-৫ এর সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, এমপি সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, ইসমাত আরা সাদেক, রণজিৎ কুমার রায়, কাজী নাবিল আহমেদ ও মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন। যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের জেলা সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন।
এদিকে, সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, বর্তমান সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, সাবেক সংসদ সদস্য খালেদুর রহমান টিটো, সাবেক পৌরমেয়র কামরুজ্জামান চুন্নু ও যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব) ডা. নাসির উদ্দিন আলোচনায় আছেন। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী রায়হান, যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম মনির, সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটন, জেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুর নাম শোনা যাচ্ছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন বলেন, দলের সভানেত্রী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিলে কাজ করতে চাই। নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বলেন, দলের কর্মী হিসেবে ছিলাম। এটা আমার গর্বের। নেত্রী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ১৬ বছর দায়িত্ব পালন করছি। আগামীতে সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে আমার কোনো প্রত্যাশা নেই। নেত্রী আমাকে যেখানে রাখবেন, সেখানেই থাকবো। সম্মেলন সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, শীর্ষ পদের নেতৃত্ব বাছাইয়ে ইলেকশন নাকি সিলেকশন হবে, সেটি জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্ধারণ করবেন। তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সম্মেলন সফল করতে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *