‘শীর্ষ করোনা আক্রান্ত ৪০ দেশের ২৫টিতে পিক টাইম শেষ’

অনলাইন ডেস্ক : বিশ্বের দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৯ লাখে। মৃতের সংখ্যা চার লাখ ৩৩ হাজারের বেশি। বৈশ্বিক আক্রান্তের হার গত এক মাসে ৩৮ শতাংশ বেড়েছে ঠিকই, বিপরীতে মৃত্যুর হার কমেছে ২২ শতাংশ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শীর্ষ ৪০ দেশের মধ্যে ২৫টি এরই মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণকাল (পিক টাইম) অতিক্রম করে ফেলেছে। বাংলাদেশসহ বাকি ১৫টি দেশে দৈনিক সংক্রমণের হার এখনো বাড়ছে। এশিয়ায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ২০ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণকাল অতিক্রম করেছে ১১টি দেশ।

২৫টি দেশে পিক শেষ!
সর্বোচ্চ সংক্রমণকাল অতিক্রম করা ২৫টি দেশের বেশির ভাগই ইউরোপের। এই তালিকায় থাকা দেশগুলো হলো; যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি, পেরু, জার্মানি, ইরান, তুরস্ক, ফ্রান্স, কানাডা, চীন, কাতার, বেলজিয়াম, বেলারুশ, নেদারল্যান্ডস, ইকুয়েডর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, পর্তুগাল, কুয়েত, সুইজারল্যান্ড, ফিলিপাইন, আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তান। আর দৈনিক সংক্রমণের হার বাড়তে থাকা ১৫টি দেশ হলো; ব্রাজিল, ভারত, চিলি, মেক্সিকো, পাকিস্তান, সৌদি আরব, বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইডেন, কলম্বিয়া, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইউক্রেন, আর্জেন্টিনা ও পোল্যান্ড।

বৈশ্বিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, সংক্রমণের তালিকায় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ সংক্রমণকাল অতিক্রম করে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। ওই সময় দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ৩২ হাজার ২৪৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। বর্তমানে এই গড় ২২ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। রাশিয়ায় সর্বোচ্চ সংক্রমণকাল ছিল মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ। ওই সময় সেখানে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার ৮৬৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। বর্তমানে এই সংখ্যা আট হাজার ৭৭৭। যুক্তরাজ্য সর্বোচ্চ সংক্রমণকাল অতিক্রম করে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে। ওই সময়ে সেখানে গড়ে পাঁচ হাজার ৫১৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

দৈনিক আক্রান্তের হার বাড়ছে; এমন দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল। সেখানে গত এক সপ্তাহে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার ছিল ২৭ হাজার ৩১৫। এরপরই রয়েছে ভারত ও চিলি। এই দুটি দেশে গত এক সপ্তাহে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার ছিল যথাক্রমে ১০ হাজার ৭১৫ এবং পাঁচ হাজার ৬৫৮।

এশিয়ায় শীর্ষ আক্রান্ত ২০ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণকাল অতিক্রম করা ১১টি দেশ হলো; ইরান, তুরস্ক, চীন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, কুয়েত, ফিলিপাইন, আফগানিস্তান, ইসরায়েল ও জাপান। আর দৈনিক আক্রান্তের হার বাড়তে থাকা ৯টি দেশ হলো; ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ওমান, ইরাক, বাহরাইন ও আর্মেনিয়া। পাকিস্তানে গত এক সপ্তাহে দৈনিক পাঁচ হাজার ৮৮৯ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। সৌদি আরব, বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ায় এই গড় যথাক্রমে তিন হাজার ৪৯১, তিন হাজার ৫১ এবং ৯৮৬ জন।

মৃত্যুহার ২২ শতাংশ কমেছে

১৩ এপ্রিল থেকে ১৩ মে—এই এক মাসে বিশ্বে ‘করোনাভাইরাস ডিজিস ২০১৯’ (কভিড-১৯) শনাক্ত হয় ২৫ লাখ ৩০২ জনের মধ্যে। দৈনিক শনাক্ত হয় গড়ে ৮৩ হাজার ৩৪৩ জন। পরের এক মাসে (১৩ মে থেকে ১৩ জুন) শনাক্ত হয় ৩৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৬ জন। দৈনিক গড় এক লাখ ১৫ হাজার ৪৬৮। অর্থাৎ, গত এক মাসে আক্রান্তের হার ৩৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে আক্রান্তের হার বাড়লেও মৃত্যুর হার অনেকটাই কমেছে। ১৩ এপ্রিল থেকে ১৩ মে—এই এক মাসে বিশ্বে মৃত্যু হয় এক লাখ ৭৩ হাজার ৫১ জনের। দৈনিক মৃত্যু হয় গড়ে পাঁচ হাজার ৭৬৮ জনের। পরের এক মাসে (১৩ মে থেকে ১৩ জুন) মৃত্যু হয় এক লাখ ৩৩ হাজার ৬০৬ জনের। দৈনিক গড় চার হাজার ৪৫৩। অর্থাৎ, গত এক মাসে করোনায় মৃত্যুর হার ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ কমেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *