ডিএমপিতে ডোপ টেস্টে ৬৮ জন শনাক্ত, চাকরিচ্যুত ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্টে ৬৮ জনের মাদকাসক্তির প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে ১০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।  রবিবার ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, যে ১০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের মধ্যে কারো কারো বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় যুক্ত থাকারও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া মাদক আটকের পর সরকারি কোষাগারে কম জমা দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম দায়িত্ব নেয়ার পরই পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট করার ঘোষণা দেন। এ পর্যন্ত ৬৮ জনের মাদক নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৭ জন এসআই, একজন সার্জেন্ট, ৫ জন এএসআই, ৫ জন নায়েক এবং ৫০ জন কনস্টেবল। মাদকাসক্ত ওই ৬৮ জন পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয় এবং ১৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

মামলা নিষ্পত্তি শেষে ওই ১৮ জনের মধ্যে ১০ জনকেই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ২৫ জনের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, মাদক বিক্রি, সেবন এবং মাদক দিয়ে ফাঁসানোসহ উদ্ধারকৃত মাদক তুলনায় কম দেখানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন ডিএমপির আরও ২৯ সদস্য। এদের মধ্যে ইতোমধ্যে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন ৬ পুলিশ সদস্য।

ডিসি ওয়ালিদ বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। মাদকের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলি। এখানে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে নির্দেশ রয়েছে, কেউ মাদকাসক্ত হয়ে বা মাদকে সম্পৃক্ত থেকে পুলিশে চাকরি করার সুযোগ নেই।

সম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেছেন, মাদক সংশ্লিষ্টতায় শাস্তি দেয়ার আগে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। যারা নিজেদের শোধরায়নি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ডিএমপির মাদকাসক্ত কোনো সদস্য আমার কাছে এলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো।

ডিএমপির পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে ডোপ টেস্ট করানো হচ্ছে। ডোপ টেস্টে যাদের পজিটিভ এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলে বাকিদের জন্য সুস্পষ্ট বার্তা যাবে যে, আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। এ উদ্যোগের ফলে অনেকে ভালো হয়েছে এবং এ রাস্তা থেকে ফিরে এসেছে।

জানা গেছে, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের শূন্য-সহিষ্ণুনীতি বাস্তবায়নে পুলিশ সদর দফতর নিরলস কাজ করছে। মাদক সেবন ও এর কারবারে জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে দু’মাস আগে ডিএমপি সদস্যদের ডোপ টেস্ট শুরু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *