রিপন কান্তি গুণ, বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :
মহাষষ্ঠী তিথির মধ্য দিয়ে গতকাল দেবী দূর্গাকে মর্ত্যে বরণ করার মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের শভ সুচনার পর। আজ মহাসপ্তমীর প্রভাতে ক্ষণে ক্ষণে উলুধ্বনি, শঙ্খ, কাঁসর আর ঢাকের বাদ্যর মধ্যমে কলাবউ স্নান ও দশভুজা দুর্গা মা’কে সপরিবারে তিথি বিহিতপূজা শুরু হয়েছে বারহাট্টার প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে।
আজ(০২অক্টোবর) রবিবার মহাসপ্তমী তিথিতে নবপত্রিকা প্রবেশের পরই দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করিয়ে, মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে চক্ষুদানের মধ্য দিয়ে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রকৃতির বিভিন্ন সৃষ্টির মধ্য নয়টি গাছের ফুল, ফল, পাতা দিয়ে সব অশুদ্ধকে শোধন করে মাকে পূজা করা হবে। এছাড়াও ধূপ-ধুনো,বেল-তুলসী, আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, পুষ্পমাল্য, চন্দনসহ ষোড়শ উপচারে আর্থাৎ ১৬টি উপাচার দিয়ে দেবী দুর্গাকে পূজা করবেন ভক্তরা।
শাস্ত্র মতে, সপ্তমী পূজার কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও সকল পূজার অনুরুপ খাদ্য উপকরণ, পূজা উপকরণ, খাদ্য উৎসর্গ ও পোশাক পরিচ্ছেদের প্রয়োজন হয়। পূজার উপকরণ সাজিয়ে সপ্তমী পূজার নির্ধারিত মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে সপ্তমী পূজা করা হয়। দুর্গা দেবীর ধ্যান মন্ত্রে ধ্যান করা হয়। দেবী দুর্গাসহ প্রতিমা সমূহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা, চক্ষু দান প্রভৃতি করা হয়।
বারহাট্টা উপজেলার গড়মা কালীবাড়ি সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, আন্দাদিয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, বারহাট্টা সদরের গরুহাট্টা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, আথানগর সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরসহ বিভিন্ন মণ্ডপগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি মণ্ডপে দেবী দুর্গার আরাধনা আর অঞ্জলিতে ব্যস্ত পূজারী ও ভক্তরবৃন্দরা।
গড়মা কালীবাড়ি পূজার আয়োজকরা জানান, বারহাট্টায় বিভিন্ন পূজা মন্ডপে সপ্তমী পূজা উপলক্ষে সন্ধ্যায় ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, আরতিসহ নানা অনুষ্ঠান হবে।
বারহাট্টা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দীপক কুমার সাহা বলেন, সকল কুচক্রী এবং অশুভ শক্তি বিনাশ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে যেন গড়ে তুলতে পারি এটাই আমাদের প্রার্থনা।
তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এ শ্লোগানে ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রেখে পূজার আনন্দকে আমরা হিন্দু-মুসলিম সবার মাঝে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি।
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মোহাম্মদ লুৎফুল হক জানান, আমদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বক্ষণ টহলে বয়েছে এবং সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য আমি নিজে প্রতিটি মণ্ডপ ঘুরে ঘুরে তদারকি করছি।
তিনি আরও বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব যেন, নির্বিঘ্নে ও আনন্দঘন পরিবেশে উৎযাপন হয় সেলক্ষ্যে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা প্রস্তুত রয়েছি।