‘চীনের বুনিয়া ভাইরাসও করোনার মতো মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়’

অনলাইন ডেস্ক : চীনের জিয়াংসু প্রদেশে ও আনহুই প্রদেশে হানা দিয়েছে আরও এক ভয়ানক ভাইরাসজনিত রোগ। রোগটিকে বলা হচ্ছে সিভিয়ার ফিভার ইউথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম বা এসএফটিএস। এরই মধ্যে এই রোগে প্রাণ হারিয়েছেন সাতজন।

আক্রান্ত আরও ৬০ জন। ‘বুনিয়া ভাইরাস’ নামক এক ভাইরাসের এমন হানার কারণে সিঁদুরে মেঘ দেখছে চীন! কারণ বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সংস্পর্শে ভাইরাসটি ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আগের আক্রান্তের ভিত্তিতে জানা গেছে, ভাইরাসটি সংক্রামিত প্রাণী বা মানুষের থেকে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। রক্তের মাধ্যমে, শ্বাস নালী ও ক্ষত দিয়েও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বুনিয়া ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ও ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অব মেডিসিনের অনুমোদিত হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিভাগের পরিচালক শেং জিফাং এই তথ্য জানিয়েছেন। চীনের স্থানীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস এই বিষয়টি এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে।

শেং জানান, তিন বছর আগে বুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এক রোগী। মারা যাওয়া ওই রোগী মাধ্যমে ১৬ মানুষ আক্রান্ত হন। ওই ১৬ জনই আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে ছিলেন। ১৬ জনের একজন আবার বুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান।

তিনি আরো বলেন, মানুষের ঝোপ ও জঙ্গলে যাওয়া উচিত নয়। ভাগ্যক্রমে এই ভাইরাসটির বাহক এঁটেল পোকা উড়তে পারে না। কেবল তাদের অঞ্চল এড়িয়ে চলাটাই নিরাপদ।

এদিকে চীনের সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব চীনের আনহুই প্রদেশের লুয়ান কাউন্টির স্থানীয় স্বাস্থ্য কমিশন শুক্রবার রাতে এই সংক্রামক রোগ ছড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসএফটিএস একটি এঁটেল পোকাবাহিত নতুন বুনিয়া ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট রোগ।

গ্লোবাল টাইমস এই রোগকে ‘উদীয়মান’ নতুন রোগ বলে দাবি করলেও, বিভিন্ন গবেষণা ঘেঁটে জানা যাচ্ছে, অন্তত ২০১০ সাল থেকেই চীনের বিভিন্ন জায়গায় এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দেখা গেছে। গত বছরই ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছিল, ২০১১ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে চীনে মোট ৫,৩৬০ টি এসএফটিএস-এর কেস গবেষণাগারে নিশ্চিত করা হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগের শিকার হয় ৪০ বছর থেকে ৮০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা। ২০১১ সালে চীনের ৯৮ টি কাউন্টি-তে এই সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৬৭।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *