কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়াকে সকল দিক থেকে উন্নত ও আধুনিক জেলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।
তিনি বলেন, উন্নয়ন ও শান্তির কুষ্টিয়া গড়া আমার লক্ষ্য ছিল। একসময় কুষ্টিয়া সন্ত্রাসী জনপদ এলাকা ছিল। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের কঠোরভাবে দমন করার চেষ্টা করেছি। কে আপন আর কে দূরের সেটা দেখিনি। সবসময় ন্যায়সংগত থাকার চেষ্টা করেছি।
২১ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়ায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে আয়োজিত নির্বাচনি পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি আমাদের প্রথম কাজ জনগণের কল্যাণ করা, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সংসদ সদস্য হিসেবে যারা নির্বাচিত হন তাদের দায়িত্ব একটু বেশি। আইন প্রণয়নের পাশাপাশি এলাকার উন্নয়ন করা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থাকায় সাংগঠনিক কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। তারপরও আমি আমার দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। আমি যখন সংসদ সদস্য হয়েছিলাম তখন কুষ্টিয়া অনেক পিছিয়ে পড়া জেলা ছিল। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রাজশাহী, সিলেটসহ অন্যান্য জেলা দ্রুত এগিয়ে গেছে। আমরা পিছিয়ে ছিলাম কারণ যারা সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ছিলেন তারা হয়ত সেভাবে গুরুত্ব দিতে পারেননি। আমি কুষ্টিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার চেষ্টা ছিল কিন্তু পরিপূর্ণভাবে পারিনি।
হানিফ বলেন, জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, বাইপাস সড়ক। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ফার্স্ট প্রায়োরিটি দিয়ে এসব কাজ করেছি। কুষ্টিয়ায় মেডিকেল কলেজ, বাইপাস সড়ক, শেখ রাসেল সেতু হয়েছে। স্টেডিয়ামের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। আরো অনেক কাজ করেছি। এরপরও আরো কাজ বাকি, এখনও করতে পারিনি।
আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার কারণে দেশজুড়ে অস্থিরতা ছিল। ২০১৫ সালে টানা ৯৩ দিন পেট্রোল বোমা সন্ত্রাস করেছে। দেশের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত ছিল। এরপর ২০১৯ সালে করোনা মহামারিতে সারা পৃথিবী বিপর্যস্ত হয়েছে। কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত অন্তত ৭০ লাখ মানুষ মারা গেছে। আমেরিকাতেই ৮ লাখ মানুষ মারা গেছে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারি শুরুর পর প্রথম থেকে আমার প্রচেষ্টা ছিল মানুষের পাশে থাকার। আর্টিফিশিয়াল ল্যাব, অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত, সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সেবার ব্যবস্থা করেছি। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে অর্থনৈতিক চরম মন্দা নেমেছে। সরকারের পক্ষেও অনেক উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হয়নি।
হানিফ বলেন, আইটি পার্কের কাজ শুরু হয়েছে, বালিয়াপাড়ায় টেক্সটাইল কলেজ হবে। এছাড়া অনেকগুলো কাজ বাকি আছে। এগুলোর বাস্তবায়ন হলে কুষ্টিয়ার চিত্র আমূল পাল্টে যাবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ দুর্যোগ শেষ পর্যায়ে আছে। আমরা আশা করছি আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার হবে এবং তার ফলে ব্যাপক কাজের সুযোগ হবে। আপনাদের সহায়তা নিয়ে অবশ্যই আরো বেশি করে স্বপ্নের কুষ্টিয়া গড়ে তুলতে পারব।
আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপি-জামায়াত তাদের রাজনৈতিক আদর্শের কারণে নির্বাচনে আসেনি। তাদের রাজনীতির উদ্দেশ্য যদি দেশের উন্নয়নের জন্য, জনকল্যাণে হয় তাহলে এই নির্বাচন দল-মত নির্বিশেষে সবাই সমর্থন করুন। দেশের কাজ করছি, কুষ্টিয়ার জন্য কাজ করছি। নির্বাচনে আপনারা নেই কিন্তু সমর্থন তো করতে পারেন। সবাই সমাজে যদি মিলেমিশে এক থাকতে পারেন। তাহলে কেন সবাই মিলেমিশে ভোট দিতে পারবেন না?
তিনি বলেন, শান্তি ও উন্নয়ন-অগ্রগতির কুষ্টিয়া গড়ার জন্য কাজ করছি। আগামী দিনের উন্নত কুষ্টিয়া গড়ার প্রত্যয়ে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন- এই প্রত্যাশা করি।