খোকসার ঐতিহ্যবাহী কালীপূজা শুরু

খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :

কুষ্টিয়ার খোকসায় শুরু হলো ঐহিত্যবাহী কালীপূজা ও মেলা। প্রায় সাড়ে ৫শ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা এ পূজা ও মেলাকে ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে অন্যরকম এক আমেজের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মহিষ ও পাঠা বলির মধ্য দিয়ে পূজোর আয়োজন শুরু হয়।

এ উপলক্ষে স্থানীয় পূজা ও মেলা উদযাপন কমিটি এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়। পূজা উপলক্ষ্যে সাড়ে সাত হাত লম্বা বিশাল দেহের দৃষ্টিনন্দন কালী প্রতিমা তৈরির করা হয়। কালীপূজাকে ঘিরে মন্দির প্রাঙ্গণে গ্রামীণ মেলায় বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছে। দেশ-বিদেশ থেকে আগত হাজার হাজার ভক্তের পদচারণায় উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে খোকসা উপজেলা সদর। মেলায় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সর্তকতা রক্ষা করা হবে বলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

খোকসার ঐতিহ্যবাহী কালীপূজা কবে শুরু হয়েছে তার সঠিক ইতিহাস নেই। তবে বর্তমান পূজারী শ্রী প্রবোধ কুমার ভট্টাচার্যের সপ্তদশ ঊর্ধ্বতন পুরুষ রামাদেব তর্কালংকার এ পূজার প্রথম পূজারী ছিলেন। এ থেকে অনুমান করা হয় খোকসার কালীপূজার বয়স প্রায় সাড়ে পাঁচ’শ বছর। আত্মপ্রচার বিমুখ তান্ত্রিক সাধু গড়াই নদীর তীরে খোকসা নামক এক জাতীয় গাছে বেষ্টিত জনমানব শূন্য জঙ্গালাকীর্ণ স্থানে এ কালীপূজা আরম্ভ করেন বলে লোক মুখে শোনা যায়। জনৈক জমিদার পুত্রকে সর্প দংশন করলে চিকিৎসার জন্য এই সাধকের কাছে নেওয়া হয়। রোগীকে কালীর পদতলে শুইয়ে দিয়ে সাধনার মাধ্যমে জমিদার পুত্রকে সুস্থ করে তোলেন সাধু। এরপর জমিদার তান্ত্রিক সাধুর নির্দেশে সাড়ে সাত হাত দীর্ঘ কালী মূর্তি নির্মাণ করে মাঘি আমাবশ্যার তিথিতে এখানে প্রথম কালীপূজা আরম্ভ করেন। আর সেই থেকে খোকসার কালীপূজার সূত্রপাত। মহিষ বলির শেষে পাংশার জমিদার ভৈরবনাথ ও শিলাইদহের জমিদার ঠাকুরের সম্মানে জোড়া পাঠা বলি দেওয়া হতো।

করোনাকালীন অবস্থা বিবেচনা করে পূজা উদযাপন কমিটি ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় এবারের শুধুমাত্র পূজা-পার্বণ অনুষ্ঠিত হবে। গ্রামীণ মেলা বসবে সীমিত আকারে- জানিয়েছে পূজা উদযাপন কমিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *