কুষ্টিয়ায় কোরবানির পশু অনলাইনে হবে বেচা-কেনা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে কুষ্টিয়ায় কোরবানির পশু বেচা কেনা শুরু হয়েছে। আর করোনাকালীন সময়ে এ বছর কুষ্টিয়ায় অনলাইনে কোরবানির পশুর হাট চালু করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। তাই এবার হাটে না গিয়ে ঘরে বসেই অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাকাটা করা যাবে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এজন্য কোরবানি পশুর হাট কুষ্টিয়া নামে ফেসবুকে একটি পেজ খোলা হয়েছে। সেখানে খামারিদের বিক্রয়যোগ্য পশুর ছবি, সম্ভাব্য ওজন, বিক্রেতার নাম-ঠিকানাসহ পোস্ট করার অনুরোধ করা হবে। এরপর ক্রেতারা তাদের পছন্দমতো পশু ক্রয় করতে পারবেন।

কুষ্টিয়া জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় ৩৮ হাজার গরু-ছাগলের খামার রয়েছে। এসব খামারে ১ লাখ ৫ হাজার গরু, ৭০ হাজার ছাগল এবং ২ হাজার ভেড়াসহ অন্যান্য পশু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। এ জেলায় মোট ১৫টি পশুর হাট রয়েছে। এসব হাট ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই পশু বিক্রি করা হয়ে থাকে। এবার অনলাইনেও চলবে এই পশু বিক্রি।

কুষ্টিয়ার খামারিরা জানান, গত বছরে তারা কোরবানির পশু বিক্রি করে ভালে লাভ করেছিল। তাই এবার আরো বেশি পরিমাণ গরু ছাগল পালন করা হয়েছে।

জেলার সদর উপজেলার আইলচারা গ্রামের দবির আলীর খামারে এবার ৪০ গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। মিরপুর উপজেলার হাজরাহাটী গ্রামের আলী হোসেনের গরুর খামারে ৮০টি গরু আছে। ৩ জন শ্রমিক সেখানে গরু পরিচর্যা করছে। তবে কোরবানির জন্য ৫০টি মাঝারি সাইজের গরু প্রস্তুত করা হয়েছে।

খামারি দবির আলি ও আলী হোসেন জানান, গত বছরে আমরা শতাধিক গরু ঢাকায় বিক্রি করে বেশ ভালো লাভ হয়েছিল। এ বছর ইতোমধ্যে কিছু গরু ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে এবার করোনার কারণে গরু বিক্রি করতে পারবে কিনা তা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।

মিরপুর উপজেলার গৌড়দহ গ্রামের খামারি ফিরোজ বলেন, প্রায় বছর খানেক আগে এক সঙ্গে ১৮টি দেশি গরু কিনেছিলাম। কিন্তু বর্তমানে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই লোকসানের আশঙ্কা করছি। এছাড়া করোনার ছোবল তো রয়েছেই।

একই এলাকার শফিকুল মণ্ডলের স্ত্রী জানান, দিশা সংস্থা থেকে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ করতে ঋণ নিয়েছিলাম। ৩টা গরু প্রায় এক বছর লালনপালন করেছি। গরু ৩টির দাম প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা হবে। এখন বিক্রি নিয়ে ভয়ে আছি।

কুষ্টিয়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে হৃষ্টপুষ্ট করায় কুষ্টিয়ার গরুর ভালো চাহিদা রয়েছে। এসব গরু কুষ্টিয়ার মানুষের ৩০ শতাংশ চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে। একই সাথে করোনার কারণে এবার কিছু খামারি অনলাইনে গরু বিক্রির কার্যক্রম চালাবে।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন জানান, কোরবানিকে টার্গেট করে কুষ্টিয়াতে ব্যাপক গবাদিপশু লালনপালন করা হয়ে থাকে। করোনার এই সময়ে হাটে না গিয়ে ঘরে বসে গরু কিনতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনলাইনে কোরবানির পশুর হাট নামে একটি পেজ খোলা হয়েছে। এর মাধ্যমে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *